উচ্চশিক্ষার জন্য বিদেশে যাওয়া এখন অনেক শিক্ষার্থীরই প্রথম পছন্দ। ইউনেস্কোর ‘গ্লোবাল ফ্লো অব টারশিয়ারি লেভেল এডুকেশন’ শীর্ষক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে প্রতি বছর বাংলাদেশ থেকে প্রায় ৫০ থেকে ৬০ হাজার শিক্ষার্থী উচ্চশিক্ষার জন্য বিদেশে পাড়ি জমান। এদের অধিকাংশই বিভিন্ন কনসালটেন্সি ফার্মের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি প্রক্রিয়া ও ভিসা প্রসেসিং সম্পন্ন করে থাকেন। বিনিময়ে ফার্মগুলো একেকজনের কাছ থেকে ৫০ হাজার থেকে কয়েক লাখ টাকা পর্যন্ত নিয়ে থাকে। কোন কনসালটেন্সি ফি ছাড়াই উচ্চশিক্ষার জন্য বিদেশগামী শিক্ষার্থীদেরকে সার্বিক সহযোগিতার জন্য বাংলাদেশ ওপেন সোর্স নেটওয়ার্ক (বিডিওএসএন) শুরু করলো বিনামূল্যে হায়ার স্টাডি সহায়তা কার্যক্রম।
এর আওতায় কিভাবে ক্লাস এইট থেকে পিএইচডি পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা বিশে^র ৩০টি দেশের ৬০০ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আবেদন করার সুযোগ পাওয়া যায়, এমন নানা প্রশ্নের উত্তরের জন্য শিক্ষার্থী, শিক্ষক, সাপোর্ট গ্রুপ লিডারদের সঙ্গে বিভিন্ন কথোপকথনের লাইভ প্রোগ্রামের ব্যাবস্থা করা হচ্ছে। এছাড়া তথ্য সমৃদ্ধ বিভিন্ন ওয়েবসাইটের সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দেয়া এবং প্রয়োজনে ওয়ান টু ওয়ান সাপোর্ট দেয়া হবে। এর জন্য বিদেশগামী শিক্ষার্থীকে কোথাও কোন কনসালটেন্সি ফি দিতে হবে না।
জানা গেছে, প্রতি বছর ইউরোপ, আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, রাশিয়া, জাপান, মালয়েশিয়া, ভারতসহ বিভিন্ন দেশে লক্ষাধিক শিক্ষার্থী উচ্চশিক্ষা অর্জনের জন্য যাচ্ছেন। তাদের মধ্যে অনেকে বৃত্তি নিয়ে বিনা খরচে পড়ালেখার সুযোগ পাচ্ছেন। ইউনেস্কো ইনস্টিটিউট ফর স্ট্যাটিসটিকসের (ইউআইএস) তথ্য বলছে, ২০০৫ সালে বিভিন্ন দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি হয়েছিলেন ১৫ হাজার বাংলাদেশি শিক্ষার্থী। ২০১৭ সালে এ সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৫৬ হাজারে। ২০১৯ সালে এসে তা লক্ষাধিক ছাড়ায়।
আমেরিকা, ইউরোপ, ভারত, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, হংকং, অস্ট্রেলিয়া ও জাপানের পাশাপাশি আমাদের দেশের শিক্ষার্থীরা ইরান, কাতার, সৌদিআরব, আরব আমিরাতের মতো মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতেও আবেদন করতে পারে। ইউনেস্কোর মতে, প্রতিবছর আমাদের দেশ থেকে অনেক ছেলেমেয়ে দেশের বাইরে আন্ডার গ্র্যাড ও পোস্ট গ্র্যাডে পড়তে যায়। এর মধ্যে হয়তো ৫০ জন কোন না কোনভাবে গণিত অলিম্পিয়াড, বিজ্ঞান কংগ্রেস ইত্যাদির সঙ্গে যুক্ত এবং তারা খুব ভাল রেকমেন্ডেশন যোগাড় করতে পারে। এদের বেশিরভাগই স্কলারশিপ পায়। বাকীরা নিজেদের টাকাতে পড়তে যায়।
বিডিওএসএনের আয়োজনে শুরু হওয়া বিনা মূল্যে এই হায়ার স্টাডি সহায়তা কার্যক্রমের মাধ্যমে স্কলারশিপ পাওয়ার জন্য কখন থেকে প্রস্তুতি নিতে হবে, আর্থিক ও মেধা অনুসারে কোন দেশে কোন ইউনিটে যাওয়া যায়, কোন কোন ইউনিটে আবেদন করে লাভ নাই, স্কলারশিপ কোথায় পাওয়া যায়, ভর্তির টাকা কতো সহজে পাঠানো যায়, একটি ইউনিটে হয়তো পার্ট টাইম কাজ যোগাড় করা সহজ, অন্যটাতে সেটা কঠিন এমন ক্ষেত্রে কোনটা বেছে নিতে হবে, স্কলারশীপের জন্য আসলে কীভাবে লড়তে হয় এরকম নানা বিষয়ে তথ্য দিয়ে সহায়তা করা হবে। এই বিনামুল্যে হায়ার স্টাডি সহায়তা কার্যক্রমে সার্বিক সহযোগিতা করছে বাংলাদেশ বিজ্ঞান জনপ্রিয়করণ সমিতি এবং ইএসডিজি ফর বিডি প্রকল্প। সংবাদ বিজ্ঞপ্তি।