Blog & News

Official blog of Bangladesh Open Source Network

গভীর অনুশীলনই যে কোন বিষয়ে দক্ষ হতে সাহায্য করে- নেটওয়ার্কিং সেশন এপিসোড ১ (পার্ট ১)

সেসব ছেলেমেয়ে পড়াশুনা শেষ করে ক্যারিয়ার গড়ার কথা ভাবছে, কিংবা যারা স্নাতক পর্যায় থেকেই নিজেকে কর্মক্ষেত্রের উপযোগী করে তোলার জন্য চেষ্টা করছে, এই নেটওয়ার্কিং সেশন মূলত তাদের জন্য। অনলাইন সেশনে উপস্থিত ছিলেন এমন প্রায় ৪০জন শিক্ষার্থী যারা দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক পড়ছেন কিংবা পাশ করে বের হয়েছেন। এই ছেলে-মেয়েদের ক্যারিয়ার ভাবনা, এবং তাদের সেই প্রস্তুতির বিভিন্ন খুটিনাটি নিয়ে কথা বলতে ২৪ অক্টোবর আয়োজিত এই অনলাইন নেটওয়ার্কিং সেশনে উপস্থিত ছিলেন তিনজন অতিথি- ডব্লিউপি ডেভেলপার এর প্রধান আসিফ এম রহমান, ব্রেইনস্টেশন ২৩ এর প্রধান রাইসুল কবির এবং জুমশেপার এর প্রধান কাওসার আহমেদ। তারা আজ কথা বলবেন তাদের ক্যারিয়ার গড়ার গল্প, তাদের প্রতিষ্ঠানে আমাদের এ প্রজন্মের ছেলেমেয়েদের সুযোগ এবং কর্মক্ষেত্রের জন্য নিজেকে তৈরী করার বিভিন্ন নির্দেশনা নিয়ে। 

মুনির হাসান- আমি প্রথমে আসিফের কাছে জানতে চাই তুমি যখন প্রোগ্রামিং শিখলে আর যখন তুমি প্রোগ্রামিং বেসড স্টার্ট আপ তৈরী করলে এর মাঝে তোমার কাছে কোনটা বেশী চ্যালেঞ্জিং মনে হয়েছে?

আসিফ এম রহমান- ছোটবেলার প্রোগ্রামিং শেখাটাই বেশী চ্যালেঞ্জিং ছিল বলব আমি। কারণ যে সময়টার কথা বলছি তখন ১৯৯৮ সাল, তখন কম্পিউটার খুব কম বাসায় ছিল। আমার কয়েকজন ভাই-বোন কম্পিউটার সাইন্সে পড়ত। তারা যখন ঈদের ছুটিতে বাড়িতে আসত, তখনি আমার কৌতূহল কাজ করত এবং তাদের কাছেই টুকটাক প্রথম শেখা শুরু করি।  তখন এভাবে শেখাটা অনেক বেশী চ্যালেঞ্জিং ছিলো। নিজের কম্পিউটার কেনার সুযোগ ঘটে ২০০০ সালে। অন্যের কম্পিউটারে টুকটাক যা বেসিক শিখেছিলাম, তখন সেটাকে আরো বিস্তারিত হাতে কলমে করার সুযোগ হয়। 

আমার স্টার্ট-আপ ক্যারিয়ারটা অনেক সহজভাবে শুরু হয়েছে। যেমন আমার আইটি বেসড বিজনেস শুরুই হয়েছে ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে। ওইসময় আমি নিজেই ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে নিজের ব্লগ তৈরীর চেষ্টা করছিলাম। সেজন্য আমাকে ওয়ার্ডপ্রেস শিখতে হচ্ছিল, তখন আমি বুঝতে পারি যে ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে ওয়েবসাইট বানানো সহজ। প্রথমে শেখাটা আমার আগ্রহ থেকে এসেছে, পরে সেটা বিজনেসের চেহারা পেয়েছে। সুতরাং বিজনেসের কারণে আসলে আমার প্রোগ্রামিং না। প্রোগ্রামিং ছোট থেকেই আমার কৌতূহলের জায়গা ছিলো। তাই আগ্রহের জায়গা আর পেশাকে ব্যালেন্স করার জন্য আসলে আমার স্টার্ট-আপ শুরু করা। সুতরাং আমার জন্য ছোটবেলার এই শেখাটা অনেক কঠিন ছিলো। কারণ ওই সময় বাসায় বোঝানো কঠিন ছিলো যে কেন একটা ছোট ছেলের কম্পিউটার লাগবে।  

মুনির হাসান- আজ আমাদের যারা পার্টিসিপেন্ট বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছে, তাদের কিন্তু ছোট থেকেই কম্পিউটারের সাথে সখ্যতা করার একটা সুযোগ ছিলো যেটা আমাদের সময়ের ছেলেমেয়েরা পায়নি। আমার প্রশ্ন হচ্ছে, এই ছেলেমেয়েরা যখন কর্মজীবনে যাবে তখন কি এই সখ্যতা কিংবা এনার্জি ধরে রাখতে পারে? নাকি ওরা টায়ার্ড হয়ে যায়? ছোটবেলার সেই উত্তেজনা কি আর থাকে?

কাওসার আহমেদ- এটা নির্ভর করছে কম্পিউটার সে কোন উদ্দেশ্যে ব্যবহার করছে সেটার উপর। এখন কেউ যদি সোশ্যাল মিডিয়ার জন্য ব্যবহার করে থাকে তাহলে আমি বলব প্রথমদিকে কম্পিউটারে প্রতি তার যে উত্তেজনা কাজ করবে সেটা পরে আর থাকবেনা। তবে কেউ যদি ইনোভেশন কিংবা সৃজনশীল কাজে একে ব্যবহার করে তবে দিন দিন কম্পিউটারের প্রতি তার আগ্রহ বাড়তেই থাকবে। সে তখন প্রতিদিন আবিষ্কার করার চেষ্টা করবে একে দিয়ে আর কি নতুন করা যায়। এই আগ্রহের কিন্তু কোন শেষ নেই। বরং এই চাহিদা তার মাঝে প্রতিদিন বাড়তেই থাকবে। সেখানে মিডিয়া কনসাম্পশন, মুভি দেখা, কার্টুন দেখা কিংবা গেমিং কিন্তু একটা খুবই লিমিটেড অংশ। শুধুমাত্র এইসব কাজে যদি তারা কম্পিউটার ব্যবহার করে থাকে তবে এর প্রতি আগ্রহ খুব বেশীদিন থাকবেনা। কম্পিউটার কে নতুন কিছু শেখার বা তৈরী করার উদ্দেশ্যে ব্যবহার করলে এই আগ্রহ অবশ্যই তাকে একটি নতুন উচ্চতায় পৌঁছে দেবে।

রাইসুল কবির- আমি ছাত্রজীবন থেকেই চাকরি করতাম। কিন্তু যখন সত্যিকারের কর্মক্ষেত্রে ঢুকলাম তখন ৮/৯ ঘন্টা অফিস করতে আমার অনেক কষ্ট হত। প্রথম ৫/৬ মাস বেশ অনেকটা কষ্ট হয়েছে। তাই আমার মনে হয় এই কষ্টটা একটু হবেই। পরে অবশ্য অভ্যাসের একটা ব্যপার চলে আসে। তবে কারো যদি পছন্দের কাজ না হয় যেমন কোডিং করা বা গ্রাফিক্সের কাজ, অনেক দিন চেষ্টা করেও অভ্যাসের ব্যপারটা আনা যাচ্ছেনা তখন আসলে অন্য কিছু চেষ্টা করে দেখা উচিত।

অংশগ্রহণকারীদের উদ্দেশ্যে রাইসুল কবির একটি প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন -


এক সেমিনারে শুনছিলাম ‘একজন প্রোগ্রামারের বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম থেকেই জোর দিয়ে প্রোগ্রামিং করতে হবে এবং চার বছর ধরে প্রতি বছর ২০০০ ঘন্টা প্রোগ্রামিং করতে হবে। এই বিষয়ে একটা থিউরি আছে 10000 hours of Master। এখন ১০ হাজার ঘন্টা তো অনেক সময়। তখন আমার মাথায় আসল যারা এখন ফাইনাল ইয়ারে পড়ছে, এতোটা সময় পার করে এসে সে কিভাবে ২০০০ ঘন্টা প্রোগ্রামিং করবে। আমার একটা বিশ্বাস আছে যে, যে কেউ, যে কোন সময়, যে কোন কিছু শুরু করতে পারে। কিন্তু সেটার জন্য তাকে সময় ধরে লেগে থাকতে হবে। তখন আমি একটা বই পেলাম “দ্যা ট্যালেন্ট কোড”। এর প্রচ্ছদে লেখা আছে “Greatness isn’t born, it’s grown”. এখানে বলে যে, কোন একটা বিষয় প্রথমে হঠাৎ করে জ্বলে ওঠে অনেক সময় ধরে গভীর অনুশীলনের মাধ্যমে। এখন যারা চাকরি খুঁজছে তারা কিন্তু অনেকটা পথ পাড়ি দিয়ে এসেছেন। এখন সারজীবনের শেখাটা শিখে তারপর কোন চাকরিদাতা প্রতিষ্ঠানে যাওয়ার মত সময় তাদের হাতে নেই। তাহলে তারা এখন কি করবে। সেখানে আমি বলতে চাই অন্তত ২০০০ ঘন্টা হলেও গভীর অনুশীলন করে আসতে হবে। সেটা আপনি যাই করতে চান না কেন। আমি যদি প্রোগ্রামিং জগতের কথা বলি, তবে এখানে যে কেউ প্রোগ্রামিং শিখতে পারেন। কিন্তু এখানে কোন শর্টকাট নেই। একদম সলিড ২০০০ ঘন্টা সময় দিয়ে কোডিং অনুশীলন করতে পারলেই আপনি কেবল এক্ষেত্রে দক্ষ হতে পারবেন। কিন্তু সেটা হতে হবে যেকোন একটা বিষয়ে। একসাথে অনেক বিষয়ে লেগে গেলে হবেনা। যেটাতে দক্ষ হতে চান শুধুমাত্র সেখানেই ২০০০ ঘন্টা গভীর অনুশীলনের সময় দিতে হবে।

networking


এখন আমি একটা সফটওয়ার ব্যবহার করি। এটার নাম ‘রেসকিউ টাইম’। ২০১৬ সালের ২৯ ডিসেম্বর আমি ক্যাশ অফ ক্যান গেম খেলা বন্ধ করেছি। ডেট মনে আছে কারণ এটা বন্ধ করতে আমার অনেক কষ্ট হয়েছিল। কারণ এই রেসকিউ টাইম আমাকে জানিয়েছিল সপ্তাহে মোট ১৩ ঘন্টা আমি শুধু গেম খেলি। আর এই সময় আমি চিন্তা করছি আরো হয়ত কিছুক্ষন খেলতে পারব যেখানে আমার চিন্তা করার কথা আমার কাজ নিয়ে। আমি আমার কাজে মন দেয়া ছেড়ে চিন্তা করছি কিভাবে আমি আমার গেমটা জিততে পারব। আমি যখন দেখলাম সপ্তাহে ১৩ঘন্টা আমি গেম নিয়ে চিন্তা করছি তখন আমি এটা ছেড়ে দেয়ার কথা ভাবলাম। অর্থাৎ আপনাকে ধরতে হবে আপনি কোন কাজে কতক্ষণ সময় ব্যয় করছেন।


অনেকসময় ছেলেমেয়েরা জিজ্ঞেস করে তাহলে এই সময়টা আমরা কি শিখব। এই বাঁচানো সময়টায় আপনি অনেক কিছু শিখতে পারেন। এখানে আমি তিনট জায়গার নাম বলছি কারণ এখান থেকে সাম্প্রতিক সময় আমরা ডেভেলপার নিয়োগ দিচ্ছি। যেমন ‘প্রোগ্রামিং হিরো’-র অনেক গুলো ছেলে-মেয়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে এখন কাজ করছে। প্রগ্রামিং হিরো-র প্রথম ব্যচ থেকে আমরা ৬/৭ জন কর্মী নিয়োগ করেছি।


এরপর আছে ‘পন্ডিত ডট কম’। আমরা জানি এনারা ট্রেনিং করান। গত মাসের তাদের ৩জন কর্মী আমাদের জাভা-তে জয়েন করেছেন।

‘ডেভস্কিল’ ডট নেট-এর ট্রেনিং করায়। এদের থেকেও অনেক ছেলেমেয়ে আমাদের প্রতিষ্ঠানে জয়েন করেন। আমরা ওই প্রতিষ্ঠানে জিজ্ঞেস করি আপনাদের কাছে কোন ছেলেমেয়েগুলো কাজ ভালো পারে আমাদের দেন, এরপর আমরা তাদের আমাদের ইন্টারভিউ প্রসেসের মাঝে ফেলি।  


একটা বিষয় এই তিনটি প্রতিষ্ঠানই শুধু ট্রেনিং করায় না, বরং হাতে কলমে শেখায়। এরা আপনাকে কিছু শেখানোর পাশাপাশি অনুশীলনের জন্য কিছু কাজ দেবে। যেগুলো করতে করতে ওই একটা বিষয়ে আপনি অনেক দক্ষ হয়ে যাবেন। তাই আমি মনে যে কেউ, যে কোন কিছুই হতে পারেন, দরকার শুধু সময় নিয়ে গভীর অনুশীলনে লেগে থাকা।


মুনির হাসান- আমি বুঝতে পারছি যে আমাদের তিনজন অতিথিই একটি বিষয়ের উপর গুরুত্ব দিচ্ছেন- কোন কিছুর সাথে ধৈর্য্য নিয়ে লেগে থাকতে হবে। এখানে একজন অঙ্গশগ্রহণকারী প্রশ্ন করেছেন সে ডেটা সাইন্স কে নিজের কাজের জায়গা হিসেবে বেছে নেবেন কিনা। এখন আমরা যদি কোন কিছুর পিছনে অন্তত ২০০০ ঘন্তা দিতাম আমরা কিন্তু সবাই কোন না কোন বিষয়ে দক্ষ হয়ে যেতাম। এই করোনাকালে আমরা কিন্তু সেই সময়টা পেয়েছিলাম। সেটা আমরা কাজে লাগাতে পারতাম। এখন আমি অতিথিদের কাছে জানতে চাই যে, যখন কোন ছেলে-মেয়ে কিছু শিখতে চাইবে তখন কি সে তার জব এর জায়গা হিসেবে সেটা ভেবে এগোবে কিনা??


কাওসার আহমেদ- আমাদের দেশে ডেটা সাইন্সের কাজের ভবিষ্যত সম্পর্কে আমার কোন ধারণা নেই। এবং আমাদের দেশে কারা ডেটা সাইন্স নিয়ে কাজ করে সেটাও আমাদের অনেকের অজানা। আমার মনে হয় এরকম অনেক বিষয় নিয়ে কথা বলতে বলতে মুখে মুখে অনেকসময় আগ্রহ তৈরী হয়। তবে শেখার জায়গায় নামলে তবে বুঝতে পারবে যে সেখানে তার এগোনর জায়গা কতটুকু আছে।


আসিফ এম রহমান- আমিও মনে করি ডেটা সাইন্স নিয়ে যে পরিমাণ আলোচনা আজকাল হচ্ছে সেই তুলনায় আমাদের দেশে সুযোগ খুবই কম। এটা নিয়ে সরাসরি পড়াশুনার সুযোগ নেই, কিছু টেনিং বা কোর্স সুবিধা হয়ত আছে। কারণ আমাদের দেশে টেলকো কোম্পানি, পাঠাও এর মত কিছু প্রতিষ্ঠানে ডেটা সাইন্সের কিছু কাজ হয়ত আছে। আরো কিছু প্রতিষ্ঠানে খুব কম পরিমাণে কাজ হয় যেখানে স্পেশালাইজড কাউকে নিয়োগ দেয়ার মত সুযোগ তৈরী হয়নি। এখন এই অবস্থায় যেসব ছেলেমেয়ে ডেটা সাইন্স শিখতে চাচ্ছে, তাদের কি ওইসব প্রতিষ্ঠানগুলো নেবে যারা এই বিষয়ে স্পেশালাইজড কাউকে খুজছে?? তারা কিন্তু নেবেনা। কারণ ডেটা সাইন্সের বিষয়টা এতোটাই জটিল যে এখানে স্পেশালাইজড কেউ ছাড়া ট্রেনিং/কোচিং করে এসে কেউ তার সর্বোচ্চ দিতে পারবেনা। এই ডেটা সাইন্স যে খাতে প্রয়োগ করা হবে সেই খাতের ডোমেইন সম্পর্কে যদি কোন ধারণা না থাকে তবে সেটা সত্যিই সম্ভব নয়। সুতরাং যারা এটা নিয়ে শিখতে চাচ্ছে তাদের জন্য আমাদের দেশে চাকরির সুযোগ খুবি কম। যদি সত্যিকার অর্থে বিশ্বজুড়ে ডেটা সাইন্স পড়তে হয় তবে কাজের অভিজ্ঞতা খুবি গুরুত্বপূর্ণ। কেউ যদি আসলেই এটা নিয়ে কাজ করতে চায় তবে বিশ্বে বেশ কিছু ভালো প্রতিষ্ঠান আছে যারা ডেটা সাইন্স নিয়ে অভিজ্ঞ এবং অনেক ভালো পড়ায়। তাই যে কোন কাজের ক্ষেত্রে প্রথম যেটা জরুরি তা হল একটা ভালো একাডেমিক জ্ঞান থাকা এবং একই সাথে বাস্তবিক কাজের অভিজ্ঞতা থাকা। সুতরাং ডেটা সাইন্স এর মত যেসব উজ্জল সেক্টরের কথা বলা হয় হয়ত ভবিষতের বৈশ্বিক চাকরি বাজারে এর ভালো চাহিদা থাকতে পারে, তবে এটা আমাদের দেশে শুরু করার জন্য ভালো উদাহরণ না। সেক্ষেত্রে হয় শুরু করতে হবে প্রোগ্রামিং বা কোডিং দিয়ে, এরপর হয়ত ধাপে ধাপে আরো শেখার পরিধি বাড়বে। আবার সবাইকে যে প্রোগ্রামিং শিখতে হবে ব্যাপারটা এমন না, তবে একটা ভিত্তি না থাকলে আসলে এসব জটিল বিষিয় নিয়ে এক্সপেরিমেন্ট করা যাবেনা।


রাইসুল্ কবির- আমিও বাকি দুজন অতিথির সাথে একমত যে শুধু বাংলাদেশেই না, সারা বিশ্বেই কিন্তু ডেটা সাইন্সের কাজ কম। মেশিন লার্নিং, ডেটা সাইন্স, আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স এসব আসলে তরকারির লবনের মত। ভবিষ্যতে সব ফিল্ডেই ডেটা সাইন্সের দরকার পড়বে। কিন্তু আপনি শুধু লবণ দিয়ে একটা তরকারি রান্না করতে পারবেননা। আপনার আনুষাঙ্গিক আরো অনেক কিছু লাগবে। তেমনি, ভবিষ্যতের অনেক কাজেই ডেটা সাইন্স লাগলেও সেটার কাজ অনেক কম। আমি যদি উদাহরণ দিতে চাই, আমার প্রতিষ্ঠানে আরএনডি টিমে দুজন গ্রাজুয়েট শিক্ষার্থী কাজ করছেন, বুয়েটের একজন এসোসিয়েট প্রফেসর আছেন এবং আমাদের ব্রেইন্সটেশন ২৩ এর পাঁচজন আছেন। সুতরাং আমদের ৩৫০ জন ডেভেলপারের প্রতিষ্ঠানের মাত্র পাঁচজন কাজ করছেন। আমাদের এই পাঁচজনকেই কিন্তু খুব বেশী প্রোগ্রামিং করতে হয়। মেশিন লার্নং টিমের কাজ করতে তাদের প্রচুর প্রোগ্রামিং করতে হয়। দেখা যাচ্ছে মেশিন লার্নিং এর একটা খুব কার্যকরী কোন টুল বানাতে গেলে বিপুল পরিমাণে প্রোগ্রামিং করতে হচ্ছে। তেমনি ডেটা সাইন্সের পরিপূর্ণ কোন কাজ করতে গেলে আনুষাঙ্গিক এমন অনেক কিছু লাগবে। এরপরেও ওই টিমে যদি আপনি সুযোগ পান ও, একে আপনার ডেভেলপ করে মার্কেটে নিয়ে আসতে প্রচুর শ্রম দিতে হবে।


মুনির হাসান- তাহলে মূল বিষয় দাঁড়াল, কারো যদি ভালো প্রোগ্রামিং এর দক্ষতা থাকে, প্রোগ্রামিং নিয়ে কাজ করার অভিজ্ঞতা থাকে এবং ডেটা এনালাইসিস সম্পর্কে ভালো ধারণা থাকে তাহলে ডেটা এনালাইসিস সম্পর্কিত বিষয় গুলোতে উচ্চতর ডিগ্রি যেমন- মাস্টার্স কিংবা ডক্টরেট এর জন্য প্রস্তুতি নিতে পারে। আমাদের দেশে ডেটা সায়েন্স এর কাজের সুযোগ খুবই কম (প্রায় ১% এর মতো), কাজেই কেউ যদি দেশে থেকে এই বিষয়ে ক্যারিয়ার গড়তে চায় তাহলে নিজেকে খুব ভালো ভাবে প্রস্তুত করতে হবে। দেশের বাইরেও এই সকল বিষয়গুলোতে খুব বেশি কাজ হয়নি। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে যারা ডেটা সায়েন্টিস্ট হিসেবে আছেন, একটু খোজ নিলেই দেখা যাবে তারা পরিসংখ্যান বা অন্য কোন বিষয়ে তাদের পড়াশুনা শেষ করেছেন। রাইসুল কবির এর কমেন্টের সাথে আমি একমত, আমিও মনে করি প্রোগ্রামিং এ ভালো জ্ঞান না থাকলে কখনোই একজন নিজেকে ডেটা সায়েন্টিস্ট বলতে পারবেন।।

 

- দ্বিতীয় অংশ আসছে......