Blog & News

Official blog of Bangladesh Open Source Network

ক্যাম্পের নির্ঘুম তিনদিন অসাধারণ মানুষদের সাথে কাটানো ছিলো অভাবনীয়ঃ ইনোভেশন বুটক্যাম্পের গল্পে সামা জামিলা রহিম

“মানুষ আর পশুপাখির মধ্যে তফাৎ হলো মানুষ লিখতে পারে, ডকুমেন্টেশনের মাধ্যমে এক প্রজন্ম থেকে পরবর্তী প্রজন্মে অর্জিত জ্ঞান স্থানান্তর করতে পারে।” – “গার্লস ইনোভেশন এন্ড অন্টারপ্রেনারশিপ বুটক্যাম্প-২”-এর প্রথমদিনই Bangladesh Open Source Network (BdOSN)-এর মুনির হাসান স্যার এরকমটাই বলেছিলেন। আরও অনেক কথার ভীড়ে এটাও বলেছিলেন যে, “বুটক্যাম্প বলা হয় কারণ এখানে ঘুমানো যায় না, রাত-দিন কাজ করতে হয়” – কথাটা শুনে খটকা লাগলেও তখনও ক্যাম্পের হাওয়ার তোড় কোনদিকে যাচ্ছে তা বুঝতে পারছিলাম না। গত ২৭ ফেব্রুয়ারি থেকে ২৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত লালমাটিয়ায় BdOSN আয়োজিত বুটক্যাম্পে একরকম পালহীন সময় কাটাচ্ছিলাম। তবে জীবনে কিছু কিছু ঘটনা ঘটে যেগুলো ঘটবার পর আমি ভাগ্যের ইয়ত্তা করতে পারি না, বুটক্যাম্পে অংশগ্রহণ করতে পারা তেমনই এক ঘটনা।

 ২৭ ফেব্রুয়ারি,২০২০, বৃহস্পতিবার, দুইখান ক্লাস বাদ দিয়েই সকাল সাতটায় রওনা হলাম লালমাটিয়ার দিকে। সাড়ে আটটায় রিপোর্টিং টাইম। সময় সম্বন্ধে অসচেতন হলেও আটটা পঁচিশের দিকেই পৌঁছে গেছিলাম, আমার সাধের বুটক্যাম্পে। আপন উদ্যোগ ফাউন্ডেশনে গিয়ে সিগনেচার করার পর বলল ৪১০ নম্বর রুমে আমার সিট। চার তলা উঠে রুমে ঢুকে আমি তাজ্জব। আমার বিছানায় রোদ এসে ছুঁয়ে যায়, আকাশ দেখা যায়, আমার জন্য স্বর্গের চেয়ে কম কিছু নয় এটা। 

img 9045

প্রথমদিনের প্রথম সেশন শুরু হলো সাড়ে নয়টা কী দশটার দিকে। প্রথমেই পরিচিতি পর্ব। পার্টনার ঠিক করে দেয়া হলো এবং একেকজন নিজের পার্টনার সম্পর্কে বলবে, তার সাথে একটা মিথ্যাও বলবে এবং অন্যদের সেই মিথ্যেটা খুঁজে বের করতে হবে। যার যার পার্টনারকে জানবার সময় মাত্র তিন মিনিট। এরপর টিম বানানো হলো, সবাই সবার আইডিয়া নিয়ে আলোচনা করলো। ইতোমধ্যেই চা বিরতি। ধীরে ধীরে অনেক মানুষের সাথে পরিচিত হতে লাগলাম, দুর্দান্ত সব মানুষের আখড়া। তবে সবচেয়ে ভালো লাগার ব্যাপার হলো, এখানে ঊনিশ বছরের একটা মেয়েও যেমন কথা বলছে তেমনি পঞ্চাশোর্ধ একজনও কথা বলছেন। একই সাথে অনেক প্রজন্মের মানুষ, একজন আরেকজনের দৃষ্টি মনোযোগ দিয়ে দেখছেন এবং ঠিক-বেঠিকও আলোচনা করছেন। প্রত্যেকেই নিজের জায়গায় এতটা শক্তিশালী, একেকজনের চোখ এত সুন্দর! এখানে মেনটররা যেরকম লিখে রাখবার মতন কথা বলেন ঠিক তেমনি যারা অংশগ্রহণ করতে এসেছেন তারাও লিখে রাখার মতন কথা বলেন।

আইডিয়া নির্বাচন থেকে শুরু করে দল তৈরী সবকিছুই ছিলো ব্যাতিক্রমধর্মী। এরপর একে একে শুরু হয় সেশনের ঝড়। পুরো ক্যাম্পের পূর্ণাঙ্গ ধারণা পাওয়া যাবে আমার একটি ব্লগে। পুরো ক্যাম্পটি কেমন হয়, এবং আমার উদ্যোক্তা হবার পথে কতখানি সহায়ক ছিলো এই ক্যাম্প পড়তে ঘুরে আসতে পারেন- https://www.thepapyrus.org/2020/03/17/%e0%a6%89%e0%a6%a6%e0%a7%8d%e0%a6%af%e0%a7%8b%e0%a6%95%e0%a7%8d%e0%a6%a4%e0%a6%be-%e0%a6%ac%e0%a7%81%e0%a6%9f%e0%a6%95%e0%a7%8d%e0%a6%af%e0%a6%be%e0%a6%ae%e0%a7%8d%e0%a6%aa%e0%a7%87%e0%a6%b0-%e0%a6%a6/ 

 

-সামা জামিলা রহিম

শিক্ষার্থী | পরিসংখ্যান বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

অংশগ্রহণকারী, গার্লস ইনোভেশন বুটক্যাম্প-II