বাংলাদেশ ওপেন সোর্স নেটওয়ার্ক এর উদ্যোগে আয়োজিত হলো ‘অ্যাডা লাভলেস সেলিব্রেশন-২০২১’ ক্যারিয়ার টক অনুষ্ঠান। কম্পিউটার সাইন্স এবং আইটি বিভাগে পড়ুয়া বা স্নাতকধারি শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য নির্ধারণ, নির্দেশনা এবং সঠিক ক্যারিয়ার বাছাইয়ের সিদ্ধান্ত বা দিক নির্দেশনা প্রদান করাই অনুষ্ঠানের মূল উদ্দেশ্য।
গত ২৫ই নভেম্বর অনলাইনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে অতিথি ছিলেন ইউ ওয়াই সিস্টেমস লিমিটেড এর সিইও এবং চেয়ার পারসন, ফারহানা এ. রহমান এবং উপস্থাপক হিসেবে ছিলেন বাংলাদেশ ওপেন সোর্স নেটওয়ার্ক এর প্রজেক্ট ম্যানেজার, জাহানারা আমির।
অনুষ্ঠানে আইটি সেক্টরের নারীদের অংশগ্রহণ এবং সুযোগ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। খাদ্য ও পুষ্টি বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা করার পর কিভাবে আইটি সেক্টরে আসলেন তা জানতে চওয়া হয় ফারহানা এ. রহমানের কাছে। এর উত্তরে তিনি জানান, বর্তমানে আইটি সেক্টর সবার জন্য। ইচ্ছা থাকলে যে কেউই এই সেক্টরে প্রবেশ করতে পারে কিন্তু আগে সে সুযোগ ছিল না। তিনি আরো জানান, যে তিনি যখন তার প্রথম চাকরিতে যোগ দেন তখন তার সন্তানের অটিজম ধরা পরে। সে সময় তিনি বুঝতে পারেন ৯টা ৫টা চাকরি তিনি করতে পারবেন না এবং ছোটবেলা থেকে তার ব্যবসার প্রতি আকর্ষণ ছিল। এসব কিছু মিলিয়ে তিনি আইটি সেক্টরে প্রবেশের সিদ্ধান্ত নেন।
এছাড়া, আইটি এমন একটা বিষয় যা বাসায় বসেও অনুশীলন করা যায়। এটাও এই সেক্টরকে বেছে নেওয়ার জন্য অন্যতম কারণ।
মেয়েদের নেটওয়ার্কিং গড়ে তুলতেও ফারহানা এ. রহমান উৎসাহিত করেন। তিনি বলেন, আজকের সময়ে এসেও মেয়েরা অনেক বাঁধার মুখে পড়েন। ফলে তারা তাদের নেটওয়ার্ক বাড়াতে পারেন না। তার এই সাফল্যের পিছনে নেটওয়ার্ক যথেষ্ঠ সাহায্য করেছে।
এ পর্যায়ে জাহানারা আমির জানতে চান একাডেমিক লেভেলে অনেক মেয়ে ভালো ফলাফল করলেও চাকরি ক্ষেত্রে গিয়ে তারা ঝরে পড়ে কেন। এর উত্তরে ফারহানা এ. রহমান জানান যে শুধু পড়ালেখা এবং ভালো ফলাফল দিয়ে সব কিছু অর্জন করা সম্ভব না। তিনি সবাইকে নিজের শখের এবং ভালো লাগার জিনিস গুলোকে গুরুত্ব দেওয়ার পরামর্শ দেন। তিনি আরো জানান যে যখন তিনি এই ব্যবসায় নামেন তখন তিনি নিজেই জানতেন না যে তিনি এই ব্যবসায় টিকে থাকতে পারবেন কিনা কিন্তু তার ইচ্ছা শক্তির ফলে তিনি আজ তার বর্তমান অবস্থায় আছেন এবং এসব কিছুর ক্ষেত্রে ‘টাইম ম্যানেজমেন্ট’ এর বিষয়টা মাথায় রাখতে হবে।
তিনি আরো জানান একজন মেয়েকে সংসার এবং চাকরি দুটো দিক সমান ভাবে চালাতে হয় সেক্ষেত্রে কিভাবে এটা ব্যালেন্স করা যেতে পারে এই প্রশ্ন করলে ফারহানা রহমান বলেন- ব্যালেন্স করতে হলে সবচেয়ে যেটা জরুরী তা হলো পরিবারকে যে কোনোভাবে হোক রাজি করাতে হবে। একজন মেয়ের অবশ্যই তার স্বামীর সমর্থন পাওয়া জরুরী। যেহেতু বাইরে কাজ করতে গেলে কখনই বেশি সময় বাড়িতে দেওয়া যায়না। কিন্তু যখন স্বামীর সমর্থন পাওয়া যায় তখন এই কাজটা খুব সহজ হয়ে যায়।
সবশেষে একটা মেয়েকে এগিয়ে যেতে হলে তাকে কী করতে হবে এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন- একটি মেয়েকে অবশ্যই স্বপ্ন দেখতে হবে। কোনো ভাবেই আশা ছাড়া যাবেনা। নিজের রাস্তাটা নিজেকেই খুঁজে বের করতে হবে। জীবনে বড় হতে গেলে এগিয়ে যেতেই হবে এবং প্রতিবন্ধকতা দূর করে এগিয়ে যাওয়ার মনোবল থাকতে হবে।
এই অনুষ্ঠান দেখে অনেক মেয়েই উৎসাহ পাবে, এগিয়ে যাওয়ার দিক নির্দেশনা পাবে বলে জানান এবং ফারহানা এ. রহমানকে ধন্যবাদ জানিয়ে অনুষ্ঠান শেষ করেন।