উদ্যোক্তা হিসেবে ক্রেতার স্বার্থকে সংরক্ষন করতে হবে, ক্রেতার আস্থা অর্জিত না হলে ব্যবসা করা অসম্ভব- আনিসুল হক কোহর্টের সমাপনী আয়োজনে কোহর্ট সদস্যদের উদ্দেশ্যে এমন বক্তব্য রাখেন আনিসুল হক ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ড. রুবানা হক। দীর্ঘ ৮ মাসব্যাপী চলমান এ প্রকল্পের অভিজ্ঞতা বিনিময় ও সমাপনী অনুষ্ঠান আয়োজিত হল ২৯ অক্টোবর ২০২৩ ইং তারিখে। আনিসুল হক ফাউন্ডেশন, বাংলাদেশ ওপেন সোর্স নেটওয়ার্ক (বিডিওএসএন) ও চাকরি খুঁজব না চাকরি দেবো সম্মিলিতভাবে এ প্রকল্পটি পরিচালনা করেছে।
নারী উদ্যোক্তাদের ব্যবসা বৃদ্ধির পরিকল্পনায় তথ্য ও গাইডলাইন, আর্থিক ও মানসিক সাপোর্ট এবং প্রোডাক্ট-মার্কেট-আর্থিক ব্যবস্থাপনা ইত্যাদি বিষয়ে সহায়তা প্রদান করে আনিসুল হক কোহর্ট ফর গ্রোথ অফ উইমেন অন্ট্রোপ্রেনিওরস প্রকল্প। ৩৭ জন ক্ষুদ্র ও মাঝারী নারী উদ্যোক্ত্যাদের নিয়ে এ বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে যাত্রা শুরু হয়েছিল এই প্রকল্পের। আজ অভিজ্ঞতা বিনিময় অনুষ্ঠানে কোহর্ট সদস্য ও মেন্টরগণ উপস্থিত ছিলেন। সমাপনী আয়োজনটি সঞ্চালনা করেন বিডিওএসএন এর সাধারণ সম্পাদক মুনির হাসান।
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের প্রয়াত মেয়র আনিসুল হকের নামে আয়োজিত এই প্রকল্পটির মূল লক্ষ্য ছিলো- নির্বাচিত উদ্যোক্তাদের সমস্যা চিহ্নিত করা এবং সেই সকল চিহ্নিত সমস্যা থেকে উত্তোরণে সাহায্য করা। সমাপনী আয়োজনে মেন্টরদের পক্ষে এফ এম প্লাস্টিকের গাজী তৈহিদুর রহমান বলেন, “উদ্যোক্তা কখনো পরাজিত হয়না, কিন্তু নিজের জয়ের জন্য অন্যের ক্ষতি করা উদ্যোক্তার ধর্ম নয়”।
প্রকল্পটির কার্যক্রমের অংশ হিসেবে মোট ৯টি বিষয়ভিত্তিক অনলাইন ইনকিউবেশন সেশন, অফিস পরিদর্শনের পর তাদের অবস্থান নির্ণয়, গার্লস ইনোভেশন বুটক্যাম্পে সংযুক্তিকরণ, আর্থিক সহায়তা ও বিপনন সহায়তা প্রদান, উদ্যোক্তা হাট, অনলাইন থেকে অফলাইনে ব্যবসা সম্প্রসারণ, বিভিন্ন প্রাতিষ্ঠানিক ট্রেনিং প্রোগ্রামে সংযুক্তিসহ বিভিন্ন সহায়তা প্রদান করে এই প্রকল্পটি। ইতোমধ্যে কোহর্টের দুইজন সদস্য তাদের অনলাইন কার্যক্রমকে অফলাইনের পাশাপাশি অফলাইন স্থানান্তর করে তা পরিকল্পনামাফিক পরিচালনা করছেন। বিগত ৮ মাস ধরে নিবিড় পর্যবেক্ষনের মধ্য দিয়ে এই কোহর্ট জার্নি শেষ করেন উদ্যোক্তারা।
অংশগ্রহণকারীরা নিজেদের ব্যবসার ধরণ বিশ্লেষণ করার পাশাপাশি কীভাবে তা বিস্তৃত করা যায় তার পরিকল্পনা তৈরি করেন। এরপর তাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করেন বিশিষ্ট মেন্টর ও বিশেষজ্ঞগণ। মেন্টর হিসেবে এই প্রকল্পের সাথে যুক্ত ছিলেন ব্র্যাক ব্যাংকের উইমেন অন্ট্রোপ্রেনর সেলের প্রধান খাদিজা মরিয়ম, স্টার্ট-আপ বাংলাদেশ এর ফাইনান্স কন্ট্রোলার মোহসেনা খানম মুন্না, তাহুর উদ্যোক্তা ও লংকা বাংলা লিমিটেড এর উইমেন অন্ট্রোপ্রেনর ডেভেলপমেন্ট ইউনিট এর প্রধান হানিয়াম মারিয়া চৌধুরী, ব্র্যান্ডিলেন এর বিজনেস হেড লিজা এ. হোসাইন, এসএমই ভাই টেকনোলজিস লিমিটেড এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মেহেদি হাসান সাগর, শাহীনস হেল্পলাইন এর ফাউন্ডার এ্যান্ড সিইও মোঃ আমিনুল ইসলাম, দি ইস্টার্ন পিকল কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক জাহিদুল ইসলাম, এফএম প্লাস্টিক-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ গাজী তৌহিদুর রহমান, , নিজল ক্রিয়েটিভ ফটোগ্রাফির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবু সুফিয়ান নিলভ, বিগ কনসাল্টেন্সি এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা মেহজাবিন বাঁধন, ব্র্যান্ড প্র্যাকটিশনারস বাংলাদেশ এর প্রতিষ্ঠাতা এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মির্জা মুহাম্মদ ইলিয়াস, এডভাইভ এর প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মহিদুল আলম, স্টার্টআপ অ্যান্ড ই-কমার্স বিশেষজ্ঞ ও আন্তর্জাতিক বিজনেস ডেভেলপমেন্ট কনসালটেন্ট মাহমুদুল হাসান মাসুম, কোডক্রাফটার ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড-এর লিড অফ মার্কেটিং এবং বিজনেস সার্ভিস মার্ক অনুপম মল্লিক প্রমুখ।
উৎপাদন, বুটিক, খাবার, লেদার, পাটপণ্য, কারুশিল্প, আইটি, ই-কমার্স সহ বিভিন্ন পর্যায়ের নারী উদ্যোক্তাদের নিয়ে এই কোহর্ট আয়োজন করা হয়েছিল। নির্বাচিত কোহর্ট সদস্যরা হলেন- শাবাব লেদারের মাকসুদা খাতুন, সাত রঙ এর ফারহানা ইয়াসমিন, এক্সট্রা মাইল এজ কেয়ার এর তাসলিমা সুলতানা, একাত্তর সোর্সিং লিমিটেড এর জোৎস্না বেগম, তুলিকা ইকো লিমিটেড এর ইসরাত জাহান , ফাইন ফেয়ার ক্র্যাফট এর মোছাঃ শাহান বেগম, আমরা পারি এর হাফিজা আক্তার রানি, ট্যাম ক্রিয়েশন এর তানহা আক্তার মুক্তা, শ্রদ্ধা এর ফাাহমিদা আহমেদ, এনেক্স লেদার এর তাহমিনা আক্তার চমক, ক্যাফে শূন্য এর হাসনাত জাহান, অনুভব বাই জেবা এর তালুকদার জেবা জাহান, বিডি এসিস্ট্যান্ট এর মোছাঃ উম্মে কুলসুম পপি, ওয়াসি ক্র্যাফট এর আফসানা ইয়াসমিন (দিবা), ফ্রেন্ডস কনসাল্টেন্সি এর শওকত আরা ফাতিমা মৌ, আশা ফুড মোছাঃ আসমা খাতুন, কারুশিল্প এর তাহুরা বানু, ধবল এর আসমা হক, এআর ফিজিওথ্যারাপি সেন্টার এর জেসমিন আক্তার , ফিউশন ফুড এন্ড জেবি কালেকশন এর ইসরাত জাহান বনানী, কেমকি বাংলাদেশ এর সায়মা সাদিয়া, পারফেকশন অফ পরিণীতা এর রওশন জাহান, পূর্ণতা ক্র্যাফট এর সাবিহা ইসলাম বিথী, সিজনস বুটিকানো থেকে জান্নাত সুলতানা, প্রয়াস এর নাসরিন জাহান সীমা, কাদম্বরি এর রাজবি তাসনিম, বাঙালি উর্মি রহমান, বেস্ট এইড এর শারমিন সোমা, সানট্রেন্ড এর সানজিদা, রঙ্গিমা এর রুবানা করিম, এআরবি ডিজাইন এর এনি রহমান বৃষ্টি, আইক্লে এর শিলা আক্তার, ডিএস ক্রিয়েশন সায়েদা ওয়াকিমুন্নেসা, ফারহানা’স ড্রিম এর ফারহানা আক্তার লাকি, আইকনিক ক্রিয়েশনস এর স্বর্ণা আক্তার, মারিয়াম ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড এর নাসরিন আক্তার।
কোহর্ট সদস্যদের সনদপত্র বিতরণের মাধ্যমে শেষ হল এই কোহর্টের কার্যক্রম। প্রকল্পটির সহযোগিতায় রয়েছে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল বিশ্ববিদ্যালয়ের আনিসুল হক স্টাডি সেন্টার, ইনোভেশন এন্ড অন্ট্রোপ্রেনিওরশিপ ডিপার্টমেন্ট এবং নাগরিক টিভি। সমাপনী আয়োজনের ফটোগ্রাফি পার্টনার ছিলো নিজল ক্রিয়েটিভ।